মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
ঝালকাঠি প্রতিনিধিঃ
ঝালকাঠির রাজাপুরে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) বিরুদ্ধে অনিয়ম, উৎকোচ গ্রহন, সরকারি অর্থ আত্মসাতসহ দুর্নীতির এন্তার অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের পিরোজপুর কার্যালয়ে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
“ফ্রেন্ডস ফর লাইফ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন” (FFL BD) নামের একটি সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক মামুনুর রশীদ নোমানী স্বাক্ষরিক ঐ অভিযোগ পত্র দেয়া হয় দুদক কার্যালয়ে।
অভিযোগ পত্রে নেমানী লিখেছেন, ‘ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মামুন অর রশিদ দুর্নীতি, অনিয়ম, উৎকোচ গ্রহন, বেনামে সম্পদ গড়া, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ এবং প্রতারনা কাজে লিপ্ত রয়েছেন।’
রাজাপুরের পিআইও’র বিরুদ্ধে দুদক কার্যালয়ে দেয়া অভিযোগ পত্রের একটি কপি সংগ্রহ করে তাতে দেখাযায় যে, ঐ অভিযোগ পত্রে অনিয়মের ১০ টি বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
বিষয় গুলো হলো, ১) রাজাপুর উপজেলা পরিষদের পুকুর খনন কাজের বিশ টন টিআর আত্মসাৎ করেছেন। ২) উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নে নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকায় টাকার বিনিময়ে বিত্তবানদের নাম অন্তর্ভুক্তি করেছেন। ৩) ত্রান ও পুনর্বাস মন্ত্রনালয়ের বরাদ্দকৃত সারে ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে উত্তর তারাবুনিয়া গ্রামে একটি খালের উপর কালভার্ট নির্মান কাজের শতকরা কুড়ি ভাগ অর্থের বিনিময়ে পাথরের বদলে ইটের খোয়া এবং লাল বালুর বদলে সাদা বালু দিতে ঠিকাদারকে সহায়তা করেছে। ৪) রাজাপুরের বড়ইয়া, গালুয়া এবং মঠবাড়ি নামক তিনটি ইউনিয়নে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্পের গৃহনির্মান কাজের মাটি ও বালু ভরাট এবং ঘর নির্মানের উপকরন ক্রয়ের জন্য নিযুক্ত ঠিকাদারেরর কাছ থেকে বিল পাশ করার সময় মোট টাকার শতকরা দশ ভাগ টাকা রেখে দেয়। ৫) তিনি নিয়মিত কর্মস্থলে না এসে মাঝে মাঝে তার ব্যক্তিগত গাড়িতে চড়ে ঘুরে যান। বেশিরভাগ সময় বরিশাল বসেই অফিসের কার্য সম্পন্ন করেন ৬) উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। ৭) টি আর, কাবিখা এবং দরিদ্র পরিবারের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচি (ইজিপিপি) কাজের গ্রামীন সড়ক সংস্কার, কালভার্ট নির্মানকাজসহ ভিজিএফ এর প্রতিটি কাজের বিল থেকে শতকরা ১২ ভাগ ঘুষ গ্রহন করে বিল পাশ করেন। ৮) তিনি বিভিন্ন নামে প্রায় কোটি টাকা মুল্যে জমি ক্রয় করেছেন বরিশাল, ঢাকা ও বানারীপাড়ায়। ৯) বিভাগীয় শহর বরিশালে ৫তলা ভীত বিশিষ্ট্য দুটি ভবন নির্মান কাজ বর্তমানে চলমান রয়েছে। ১০) তার মোবাইল ফোনের নম্বরে কল দিলে তিনি তা রিসিভ করেন না।
এই দশটি পয়েন্ট ছাড়াও অভিযোগ পত্রে উল্লেখ রয়েছে যে, পিআইও মামুনুর ১০ হাজার টাকা মাসিক বেতনে ব্যাক্তিগত গাড়ী চালক পুষেন। তার ঐ গাড়িটিও ঘুষের টাকায় ক্রয় করা।
দুদকের কাছে লিখিত দেয়া সকল অভিযোগ নিয়ে মুঠোফোনে কথা হয় অভিযুক্ত পিআইও মামুনুর রশিদের সাথে। তিনি বলেন, বরাদ্দকৃত টিআর এর অর্থ দিয়ে উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরে পুকুর সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আমার নামে অন্য যে অভিযোগগুলো করা হয়েছে সে বিষয়য়ে আমি গনমাধ্যমে কোনো সাক্ষাৎকার দিতে চাইনা।
দুর্নীতি দমন কমিশন পিরোজপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শেখ গোলাম মাওলা মুঠোফোনে বলেন, ‘এ সংক্রান্ত কোনো অভিযোগপত্র এখনো হাতে পাইনি। ডাকযোগে অভিযোগপত্রটি আমার দপ্তরে পৌছালে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে।